দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় চার নেতা হত্যার দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের দাবি জানিয়ে আসছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের ছেলে তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। সোহেল তাজকে ফোন করে দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (৪ নভেম্বর) সোহেল তাজ জানিয়েছেন, তার দাবির বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
সোহেল তাজ ফেসবুকে লেখেন, ‘৩ দফা দাবি আপডেট: আপনারা সবাই শুনে আনন্দিত হবেন যে আজকে সকালে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাকে ফোন করেছিলেন এবং ওনার সঙ্গে আমার বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাজউদ্দীন আহমদ এবং জাতীয় চার নেতার অবদানের কথা তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেন যে, তিনি পদক্ষেপ নেবেন যাতে নতুন প্রজন্ম আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস জানতে পারে।’

তিন দাবিতে রবিবার পদযাত্রা কর্মসূচি ডেকেছিলেন সোহেল তাজ। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করার কথা ছিল তার।

তবে পদযাত্রা করতে হয়নি। গতকাল রবিবার পদযাত্রা শুরুর আগেই প্রধান উপদেষ্টার দফতর থেকে তার স্মারকলিপি সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া হয়।

৪টায় তিন দফা দাবিতে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল সংলগ্ন সাকুরা রেস্টুরেন্টের সামনে উপস্থিত হন সোহেল তাজ। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরুর আগেই বিকাল ৫টায় প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের প্রতিনিধি এসে দাবি সংবলিত স্মারকলিপি নিয়ে গেলে, পরে আর পদযাত্রা করার প্রয়োজন হয়নি।

এ সময় সাকুরা রেস্টুরেন্টের উল্টো পাশে শতাধিক পুলিশকে রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতাকে (সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, এ এইচ এম কামারুজ্জামান) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই কলঙ্কিত দিনকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনসহ তিন দফা দাবি করেছেন সোহেল তাজ। বাকি দুটি দাবি হচ্ছে—১০ এপ্রিল ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা করা; জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ সব ব্যক্তির অবদান ও জীবনীসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তকে ও সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা।

গতকালের পদযাত্রা নিয়ে সোহেল তাজ বলেছিলেন, এই পদযাত্রাই শেষ পদযাত্রা উল্লেখ করে সোহেল তাজ বলেন, ‘আজকের এই পদযাত্রা আমার শেষ পদযাত্রা। ব্যক্তিগতভাবে আমি লজ্জিত। আমার পথে নামতে হচ্ছে এই দাবিগুলো নিয়ে। এটা রাষ্ট্রের বাস্তবায়ন করার কথা।’

তিনি বলেন, ‘কোনো পরিবার বা আমার পিতার জন্য এই আন্দোলন না। এই পদযাত্রা করেছি বাংলাদেশকে ভালোবেসে। আমি চাই আমার সন্তান, আপনাদের সন্তান যেন সুন্দর বাংলাদেশ পায়।’

No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();